লিখেছেন নাঈমুল করিম
ঢাকা (থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন) — জাতিসংঘের যে আন্তর্জাতিক চুক্তি বিভিন্ন দেশকে মানবপাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে একতাবদ্ধ করে, সেই চুক্তিতে সম্মতি দেয়ায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা এড়াতে পারবে, বুধবার জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা এমন মন্তব্য করেছেন।
গত তিন বছরে মানবপাচারের বিভিন্ন ঘটনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরদারিতে রয়েছে বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের অবস্থান আরো খারাপ হতে পারে, যা বাংলাদেশকে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ার ও বিদেশি সহায়তা পাওয়ার পথে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।
গত রোববার বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের পালেরমো প্রোটোকলে সম্মতি জানানোর ঘোষণা দেয়। এই চুক্তির ফলে এর অধীনে থাকা দেশগুলো অপরাধ দমনের আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা ও নীতিমালা সম্পর্কে সবিস্তারে অবহিত হতে পারবে।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থার মুখপাত্র জর্জ ম্যাকলিওড বলেন, এই চুক্তিতে সম্মত হওয়া বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সহায়তা করবে।
তিনি থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেন, “এই চুক্তিতে সম্মত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি হবে। পাচাররোধ করার পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ এবং চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলো একই অবস্থানে আছে।”
গত জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের সর্বশেষ ট্র্যাফিকিং ইন পারসন (টিআইপি) প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশ মানবপাচার রোধ করতে নূন্যতম মান রক্ষা করতে পারেনি, তবে তারা উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
প্রতিবেদনটিতে দেশে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বলপূর্বক কাজ করতে বাধ্য করানো এবং যৌন পাচারের কিছু সম্ভাব্য অপরাধ যথাযথভাবে তদন্ত করতে না পারায় বাংলাদেশ সরকারের সমালোচনা করা হয়।
অন্য দিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে তারা নতুন সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।
২০১২ সালে পাস হওয়া এক আইনে জাতিসংঘের চুক্তির সমস্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত আছে এবং সেখানে পাচারকারিদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনটি দুর্বলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে এবং শাস্তির অনুপাতও খুবই কম।
তারা আরো বলছেন, পাচারের শিকার হওয়াদের পুনর্বাসনে সরকার যথাযথভাবে কাজ করেনি। একই সাথে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সম্মত হওয়ার ফলে এই বিষয়গুলো এখন পরিবর্তন হবে।
অভিবাসী অধিকার সংস্থা অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের প্রধান শাকিরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, “চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমরা আরো বেশি দায়বদ্ধ থাকবো এবং সরকারও আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বাধ্য থাকবে।”
(প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন নাঈমুল করিম @Naimonthefield; সম্মাদনা করেছেন ক্লেয়ার কোজেন্স। অনুগ্রহ করে থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে ক্রেডিট দিন, যা থম্পসন রয়টার্সের দাতব্য শাখা এবং যা মানবিক, নারী ও এলজিবিটি+ অধিকার, মানবপাচার, সম্পত্তির অধিকার এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করে। ভিজিট করুন: http://news.trust.org)
Our Standards: The Thomson Reuters Trust Principles.