×

Our award-winning reporting has moved

Context provides news and analysis on three of the world’s most critical issues:

climate change, the impact of technology on society, and inclusive economies.

লাল কালিতে সন্দেহজনক পাচারকারিদের বাড়ি চিহ্নিত করে দিচ্ছে বিজিবি

by Naimul Karim
Friday, 27 September 2019 12:09 GMT

Tota Miya, 10, shows his hands after preparing soil to make bricks in a brick field on the outskirts of Dhaka November 21, 2009. About 20 children are employed at the brick factory and most work 12 hours a day. The daily wage is 150 taka ($2.20) for them. REUTERS/Andrew Biraj

Image Caption and Rights Information

লিখেছেন নাঈমুল করিম

 

ঢাকা, সেপ্টেম্বর ২৭ (থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন) - বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ- বিজিবি) সন্দেহজনক মানব ও মাদক পাচারকারিদের বাড়িতে লাল কালিতে সতর্কবার্তা লেখে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন একজন কর্মকর্তা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার রোধ করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

 

একজন জ্যেষ্ঠ সীমান্তরক্ষী জানিয়েছেন, ভারতের উত্তরপূর্ব সীমান্তের সাথে লাগোয়া গ্রামে সন্দেহজনক মানবপাচারকারির বাড়িতে লাল কালিতে লেখে দেয়া হচ্ছে যে ‘এটি মানবপাচারকারির বাড়ি’। 

 

প্রতি বছর কয়েক হাজার বাংলাদেশি ভারতে পাচারের শিকার হোন। তাদের বেশির ভাগকেই পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয় ও গৃহভৃত্য হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হয় বলে পাচারবিরোধীরা দাবি করেন, যদিও এ বিষয়ে সরকারি নথি খুবই অপ্রতুল।

 

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডসের আঞ্চলিক কমান্ডার গোলাম কবির বলেন বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ মানবপাচারকারিদের বিচার নিশ্চিত করতে পারছে না। এ দিকে, ২০১১ সাল থেকে পাচারের শিকার অন্তত ১৮০০ লোককে বাংলাদেশ সরকার দেশে ফিরিয়ে এনেছে। 

 

থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে কবির বলেন, “আমরা অনেক পাচারকারিকে গ্রেফতার করেছি এবং তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও করা হয়েছে। কিন্তু তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে যায় এবং আবারও পাচারে লিপ্ত হয়। আশা করি এই উদ্যোগ (সন্দেহজনক পাচারকারিদের বাড়িতে চিহ্নিত করা) তাদেরকে প্রতিহত করতে কাজে লাগবে। তাদের বিরুদ্ধে চাপ তৈরি করা জরুরি।”

 

গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের নজরদারিতে রয়েছে, যা বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও আন্তর্জাতিক সহায়তা কম পাওয়ার ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ট্র্যাফিকিং ইন পার্সন প্রতিবেদনে বাংলাদেশের কিছু ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যার মধ্যে আছে অবৈধ চাকরিদাতা এজেন্টদের প্রতিহত করা ও রোহিঙ্গা শরনার্থীদের পাচার করার সম্ভাব্য অপরাধ তদন্তে ব্যর্থ হওয়া। বাংলাদেশ সরকার বলছে, তারা এই বিষয়গুলো সমাধান করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

 

এ দিকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী- তাইজুল ইসলাম, লাল কালিতে সন্দেহভাজন পাচারকারিদের বাড়ি চিহ্নিত করার বিষয়টির সমালোচনা করেছন। তার মতে, এই উদ্যোগ অসমীচীন এবং এটি দোষী প্রমাণিত হওয়ার আগে প্রতিটি মানুষ নির্দোষ- এই নীতি লঙ্ঘন করে। 

 

তিনি বলেন, “দালালদের পরিবারের লোকজনদের কথা ভেবে দেখুন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে তাদেরকেও কিন্তু চিহ্নিত করা হয়। এটি তাদের উপর বাজে প্রভাব ফেলবে।” তাইজুল দাতাসংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিস ট্রাস্টের একজন উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেন। 

 

পাচারবিরোধী আইনজীবী ও গবেষকরা এই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ সন্দেহভাজনদের শাস্তি দেয়ার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে বলেছেন যে তাদের অনেকেই হয়তো পাচারকারি দলের সাথে সম্পৃক্ত নন। অনেকে আবার বলছেন, পাচারকারিদের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়তে এমন উদ্যোগ প্রয়োজন।

“যেহেতু পাচার বিষয়ক মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘ সময় লাগে, সেহেতু তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক চাপ তৈরি করা প্রয়োজন।” এমন মন্তব্য করেছেন অভিবাসিদের অধিকার বিষয়ক সংস্থা অভিবাসি কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম। 

 

২০১২ সালে প্রণীত এক আইনের অধীনে ৪০০০-এর বেশি মানবচারের মামলা বিচারের জন্য সারাদেশে অপেক্ষমান আছে, ওই আইনের মাধ্যমেই মানবপাচার অপরাধ বলে গণ্য হয়। এ দিকে, এই সব মামলায় এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ জন মানুষ অপরাধী বলে চিহ্নিত হয়েছেন।  

 

শাকিরুল আরো বলেন, “আমি গ্রামের লোকদের চিনি যারা পাচারের মতো অপরাধ করে, কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরে এটি করে আসছে। সমাজের মানুষের জানা দরকার তারা আসলে কারা।”

 

(প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন নাঈমুল করিম @Naimonthefield; সম্মাদনা করেছেন কিরেন গিলবার্ট। অনুগ্রহ করে থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে ক্রেডিট দিন, যা থম্পসন রয়টার্সের দাতব্য শাখা এবং যা মানবিক, নারী ও এলজিবিটি+ অধিকার, মানবপাচার, সম্পত্তির অধিকার এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করে। ভিজিট করুন: http://news.trust.org)

Our Standards: The Thomson Reuters Trust Principles.

-->