লিখেছেন নাঈমুল করিম
ঢাকা, সেপ্টেম্বর ১৬ (থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন) - গত সোমবার বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মানবপাচার বিষয়ক প্রচুর জমে থাকা মামলা নিষ্পত্তিতে পরামর্শের জন্য একজন সাবেক বিচারপতিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাচার- সম্পর্কৃত অপরাধ দমনে আরো বেশি ব্যবস্থা গ্রহণের আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এমন পদক্ষেপ নিলো বাংলাদেশ।
মানবপাচার বিষয়ক কর্মকাণ্ডের জন্য গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের নজরদারিতে রয়েছে, যা বাংলাদেশকে নিষেধাজ্ঞা ও আন্তর্জাতিক সহায়তা কম পাওয়ার ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
সর্বশেষ পুলিশি নথি অনুসারে, ২০১২ সালে প্রণীত এক আইনে মানবপাচার বিষয়ক ৪০০০-এর বেশি মামলা বিচারের জন্য অপেক্ষমান আছে, ওই আইনের মাধ্যমেই মানবপাচার অপরাধ বলে গণ্য হয়। এ দিকে, মামলার পরিমাণ এতো বেশি হলেও, অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে মাত্র ৩০ জনকে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাচার বিরোধী কার্যক্রমের প্রধান আবু বকর সিদ্দিক থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেন, “এই মামলাগুলোর মধ্যে কিছু কয়েক বছর ধরে পড়ে আছে।”
একই সাথে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক রেজা তারিক আহমেদের নিয়োগ নিশ্চিত করে তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে আমাদের বোঝা দরকার এই মামলাগুলো ঠিক কী কারণে এভাবে আটকে গেছে।”
পাচারবিষয়ক মামলাগুলো খতিয়ে দেখতে আহমেদ সারা দেশে ঘুরে ঘুরে করবেন এবং প্রমাণ হাজির করার প্রক্রিয়ার ফাঁক-ফোকর চিহ্নিত করবেন। এর পাশাপাশি কিভাবে কাজ এগিয়ে নিতে হবে, এ বিষয়ে তিনি পরামর্শ দিবেন।
গত জুনে প্রকাশিত সর্বশেষ ট্র্যাফিকিং ইন পারসনস প্রতিবেদনে স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে যে, পাচার রোধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকার সর্বনিম্ন পর্যায়ের উদ্যোগও সম্পূর্ণ করতে পারেনি, যদিও তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনটিতে কিছু সম্ভাব্য অপরাধ তদন্ত করতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করা হয়। অপরাধগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোরপূর্ব কাজ করতে বাধ্য করা ও যৌন পাচার উল্লেখযোগ্য।
তবে বাংলাদেশ সরকার দাবি করেছে যে, এই সমস্যাগুলো সমাধানে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে পাচারবিরোধী দাতব্য সংস্থা জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের দেশীয় প্রধান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, “এই ধরনের উদ্যোগ এবারই প্রথম নেয়া হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “এই উদ্যোগ গ্রহণ করাটা দারুণ ব্যাপার এবং আমরা যথাযথ ফলাফল আশা করছি।”
(প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন নাঈমুল করিম @Naimonthefield; সম্মাদনা করেছেন ক্লেয়ার কোজেন্স। অনুগ্রহ করে থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে ক্রেডিট দিন, যা থম্পসন রয়টার্সের দাতব্য শাখা এবং যা মানবিক, নারী ও এলজিবিটি+ অধিকার, মানবপাচার, সম্পত্তির অধিকার এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করে। ভিজিট করুন: http://news.trust.org)
Our Standards: The Thomson Reuters Trust Principles.