লিখেছেন নাঈমুল করিম
ঢাকা, জানুয়ারি ১৫ (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন) - অভিবাসীদের অপহরণ ও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত দুজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, শুক্রবার জানিয়েছে পুলিশ। প্রথমবারের মতো মানব পাচারে সন্দেহভাজনদের যাবতীয় তথ্য ইন্টারপোলকে দিয়েছিলো বাংলাদেশ, এর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাদের গ্রেপ্তার করা হলো।
পুলিশ জানিয়েছে, বিদেশি চাকরিপ্রার্থীদের সাথে প্রতারণা, অপহরণ ও হত্যার দায়ে সন্দেভাজন ও পলাতক হিসেবে ইন্টারপোলের লাল তালিকাভুক্ত ৩৮ বছর বয়সী জাফর ইকবালকে এ মাসের শুরুতে ইতালিতে আটক করা হয়।
দ্বিতীয় ব্যক্তি, ২৯ বছর বয়সী শাহাদাত হোসেনকে গত বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। তিনিও ইন্টারপোলের তালিকায় একই ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন।
এ দুজন লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের পাচারের দায়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তি, এ কথা জানিয়ে বাংলাদেশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জিসানুল হক এ বিষয়ে বলেন, “ইন্টারপোল আমাদের অনেক সহায়তা করেছে।”
তিনি আরো বলেন, “যারা ভবিষ্যতে কোনো বাংলাদেশির সাথে প্রতারণা করবে, আমরা তাদেরকে ধরতেও এদের (ইন্টারপোলের) সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করবো”
গত বছরের মে মাসে লিবিয়াতে অন্তত ২৪ জন বাংলাদেশি অভিবাসী অপহৃত হয়ে খুন হন। এরপর গত নভেম্বরে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পাচারের হোতাদের আটক করতে ইন্টারপোলের সহায়তা চায়।
ওই হত্যাযজ্ঞের পর সন্দেহভাজন ৫০ পাচারকারিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ যারা বিদেশে ভুয়া চাকরির নিশ্চয়তা দিয়ে জোর করে অর্থ আদায়ের দায়ে অভিযুক্ত ছিলেন। এদের মধ্যে একজন পাচারচক্রের প্রধানও ছিলেন যে অবৈধভাবে ৪০০ বাংলাদেশিকে লিবিয়া পাঠিয়েছেন।
ইন্টারপোলের লাল তালিকায় ৭০ জনের বেশি বাংলাদেশি আছেন, এদেরকে অস্থায়ী ভিত্তিতে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হয়।
বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বড় মানবশক্তি রপ্তানিকারক দেশ। প্রতি বছর প্রায় ৭০০,০০০ বাংলাদেশি বিদেশে যান। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশটি পাচারকারিদের কাছে ভঙ্গুর, কারণ নিয়োগ প্রক্রিয়ার বেশির ভাগই লাইসেন্সবিহীন দালালদের উপর নির্ভরশীল।
পাচারবিরোধী দাতাসংস্থা জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের কান্ট্রি ডিরেক্টর তারিকুল ইসলাম বলেন দুজনকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বাংলাদেশ এই বার্তা দিলো যে দেশ থেকে অনেক দূরে থাকলেও পাচারকারিদের ধরা যাবে।
তিনি আরো বলেন, “এই ঘটনা পুলিশকে আন্ত:দেশীয় পাচারের মামলাগুলো তদন্ত করতে সাহস জুগাবে, যে ক্ষেত্রে প্রমাণ সংগ্রহ করা কঠিন; এর মাধ্যমে পাচারের মামলাগুলো আদালতে নিষ্পত্তিতেও গতি বাড়বে।”
Our Standards: The Thomson Reuters Trust Principles.