লিখেছেন নাঈমুল করিম
ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ১৫ (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন) - বাংলাদেশি গৃহকর্মীকে হত্যার দায়ে সৌদির একজন নারীকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিয়েছে সৌদি আরবের একটি ফৌজদারি আদালত। দক্ষিণ এশিয়ান দেশটি বলছে, অভিবাসী গৃহকর্মীকে অত্যাচার করে চাকরিদাতার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ঘটনাটি একটি অভূতপূর্ব উদাহরণ।
বাংলাদেশ সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ভালো বেতনের চাকরির আশায় সৌদি আরব যাওয়ার দুই বছর পর, ২০১৯ সালে আবিরন বেগম তার চাকরিদাতা আয়েশা আল জিযানির হাতে খুন হন, যাকে রোববার মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছে।
চার বছর আগে ৪০ বছর বয়সী এই নারীকে সৌদির চাকরির “ফাঁদে ফেলা” দালালের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে বেগমের পরিবার অনুরোধ করেছে।
বেগমের ভগ্নীপতি আইয়ুব আলি এ বিষয়ে থমসন রয়টার্সকে বলেন, “বেশি বেতনে চাকরি করার জন্য সে সৌদি গিয়েছিলো, যাতে সে বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখাশোনা করতে পারে।”
তিনি আরো বলেন, “বাড়ি থেকে যাওয়ার দুই সপ্তাহ পর থেকেই তাকে অত্যাচার করা শুরু হয়। সে আমাদের ফোন করে কান্নাকাটি করতো… আমরা তাকে চাকরি দেওয়া দালালদের হাতে-পায়ে ধরে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ করেছি। কিন্তু কেউ আমাদের কথা কানে তুলেনি।”
প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আহমেদ মুনিরুস সালেহিন বলেন, “বেগমের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা এবং তাকে বেআইনীভাবে বাড়ির বাইরে কাজ করানোর অপরাধে জিযানির স্বামীকে তিন বছরের জেল দেওয়া হয়েছে।”
সালেহিন জানিয়েছেন, জিযানির সন্তানকে সাত মাসের জন্য কিশোর সুবিধাকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ জনশক্তি রপ্তানীকারক দেশ, এবং দেশটি প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক আয়ের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
মহামারির আগে বছরে অন্তত ৭০০,০০০ বাংলাদেশি চাকরির উদ্দেশে বিদেশ গমন করতেন। বাংলাদেশিদের প্রধানতম গন্তব্য সৌদি আরব, যদিও দক্ষিণ এশিয়ান দেশটির জন্য সৌদি আরবে চাকরি পেতে প্রচুর অর্থ খরচ করতে হয়।
শ্রমিক অধিকারকর্মীদের মতে, অনানুষ্ঠানিক দালালদের মাধ্যমে চাকরির ফি পরিশোধ করার পদ্ধতি জালিয়াতি ও পাচারের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।
অধিকারকর্মীদের মতে, চাকরিদাতার বিরুদ্ধে সৌদির আদালত যে রায় দিয়েছে তা অস্বাভাবিক।
অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের প্রধান শাকিরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, “আমি অভিবাসীদের নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ করছি, কিন্তু কোনোদিন এ রকম কোনো রায়ের কথা শুনিনি।”
Our Standards: The Thomson Reuters Trust Principles.
