×

Our award-winning reporting has moved

Context provides news and analysis on three of the world’s most critical issues:

climate change, the impact of technology on society, and inclusive economies.

শ্রমিক নিরাপত্তার পরীক্ষামূলক মামলা নিয়ে ছুটছেন বাংলাদেশি জাহাজ ভাঙা শ্রমিকের বিধবা স্ত্রী

by লিখেছেন নাঈমুল করিম
Friday, 12 March 2021 13:29 GMT

Workers pull a long rope at a ship-breaking yard in Chittagong, Bangladesh July 17, 2013. REUTERS/Andrew Biraj

Image Caption and Rights Information

লিখেছেন নাঈমুল করিম

ঢাকা, মার্চ ১১ (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন) - জাহাজভাঙা শিল্পের একটি পরীক্ষামূলক মামলায় যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে লড়ার জন্য চলতি সপ্তাহে সবুজ সঙ্কেত পেয়েছেন একজন বাংলাদেশি নারী যার স্বামী একটি স্থানীয় জাহাজভাঙা কারখানায় কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারান।

ব্রিটেনের কোর্ট অব আপিল লন্ডনভিত্তিক শিপব্রোকার প্রতিষ্ঠান ম্যার‍্যান (ইউকে) লিমিটেডের অবহেলার একটি মামলা খারিজ করার আবেদন বাতিল করে দিয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠানটির খারিজ হওয়া দ্বিতীয় আপিল।

২০১৮ সালে হামিদা বেগমের স্বামী ৩২ বছর বয়সী খলিল মোল্লা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে একতা নামের একটি ট্যাঙ্কার ভাঙার সময় পড়ে গিয়ে মারা যান। চট্টগ্রামে পৃথিবীর অন্যতম বড় বড় জাহাজভাঙা কারখানা অবস্থিত, যেখানে জাহাজ ভেঙে ছাঁট লোহা বের করা হয়।

হামিদা বেগমের যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক আইনজীবী বলেছেন ম্যারানকেই মোল্লার মৃত্যুর দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের জাহাজভাঙা কারখানাগুলোর কর্ম পরিবেশ বিপজ্জনক বলে পরিচিত। তারপরও সেখানে ভাঙা হতে পারে জেনেও ম্যার‍্যান একটি মধ্যস্থতাকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে জাহাজ বিক্রি করেছে।

আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থা জাহাজভাঙানকে পৃথিবীর অন্যতম বিপজ্জনক পেশা হিসেবে অভিহিত করেছে। কিন্তু জাহাজা ভাঙার পরিবেশ নিরাপদ করার দাবি নিয়ে কাজ করা এনজিও শিপব্রেকিং প্লাটফর্ম বলছে, মারা যাওয়া ও নানাভাবে আহত হওয়া শ্রমিকদের দায়িত্ব নেওয়ার কেউ নেই।

অলাভজনক সংস্থা ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশনের দাবি মতে, গত বছর অন্তত সাতজন বাংলাদেশি জাহাজ ভাঙতে গিয়ে মারা গেছেন এবং ২০১৯ সালে মারা গেছেন ২৪ জন।

বেগমকে প্রতিনিধিত্বকারি আইনী প্রতিষ্ঠান লি ডে বলছে এটিই সম্ভবত কোনো উচ্চ আদালতের প্রথম রায় যা সরাসরি জাহাজ সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানকে দায়ি করা যায় বলে প্রমাণ করলো।

লি ডে’র অংশীদার অলিভার হল্যান্ড এ বিষয়ে বলেন, “এই মামলা থেকে যা বেরিয়ে এসেছে তা জাহাজ ভাঙা শিল্পকে নাড়িয়ে দেবে, কারণ উচ্চ আদালত এটি চিহ্নিত করেছে যে সব জাহাজ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে জাহাজ ভাঙতে পাঠাবে, স্থানীয় কর্মীদের জন্য নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করাও তাদেরই দায়িত্ব।”

আদালতের আপিল নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গত কয়েক দশক ধরে জাহাজ মালিকরা সরাসরি জাহাজ ভাঙা প্রতিষ্ঠঅনের মদলে মধ্যস্থতাকারি বা দালালদের মাধ্যমে জাহাজ ভাঙিয়ে নিচ্ছেন।

ম্যার‍্যান (ইউকে) লিমিটেড থমসন রয়টার্সের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে বেগমের প্রতি “শোক ও সমবেদনা” প্রকাশ করেছে।

প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, “কোর্ট অব আপিলের রায় শুধুমাত্র আইনি বিষয়ের ভিত্তিতে, ধারণামূলক তথ্যে সম্পাদিত হয়েছে এবং মামলাটি এই অবস্থায় আটকে থাকা উচিত নয়।”

তারা আরো বলেছে, “যেহেতু মামলাটি চলমান, সুতরাং এ বিষয়ে এখন কোনো মন্তব্য করা উচিত হবে না।”

আইনী লড়াইটি শুরু হয় ২০১৯ সালে যখন বেগমকে প্রতিনিধিত্বকারি ব্রিটিশ আইনজীবী বাংলাদেশে ভাঙা জাহাজের দুর্ঘটনার জন্য ম্যারানকে দায়ি করেন।

গত বছরের জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠানটি মামলাটি খারিজ করার আবেদন করেছিলো, কিন্তু লন্ডনের আদালত বলেছেন মোল্লার বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব এই শিপিং প্রতিষ্ঠানটির উপরই বর্তায়।

প্রতিষ্ঠানটি আবারও আপিল করে এবং ফেব্রুয়ারিতে এ বিষয়ক শুনানি হয় এবং চলতি সপ্তাহে রায়টি প্রকাশ করা হয়।

রায়ের একটি কপি থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের কাছে আছে, সেখানে লর্ড জাস্টিস কুলসন তার রায়ে বলেন, “আমি মনে করেছি এই মামলায় দেখভালের দায়িত্ব অবহেলা করার যে অভিযোগ করা হয়েছে, যদিও তাতে অনেক বাধা ছিলো, তারপরও এটিকে কল্পিত হিসেবে খারিজ করা যায় না।”

তিনি আরো বলেন, “আমি এও মনে করেছি যে, যেহেতু এটি দ্রুত-সমৃদ্ধ হওয়া আইনের একটি অংশের বিরল বিতর্ক, এই বিচারকে তাই এ অবস্থায় বাতিল করা একটি মৌলিক ভুল হবে।”

এনজিও শিপব্রেকিং প্লাটফর্মের মতে, ক্ষয়প্রাপ্ত বেশির ভাগ জাহাজের গন্তব্য হয় বাংলাদেশে যেখানে গত বছর অন্তত ১৪৪ টি জাহাজ ভাঙা হয়েছে, অথবা ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে ভেঙে ফেলা প্রতি পাঁচ জাহাজের একটিরই গন্তব্য ছিলো বাংলাদেশ।

অন্য জাহাজগুলোর গন্তব্য হয় ভারত, পাকিস্তান বা তুরস্কে।

হাজার হাজার বাংলাদেশি এই শিল্পের উপর নির্ভরশীল, কিন্তু অধিকারবিষয়ক সংস্থাগুলো বেশ কয়েক বছর ধরে বিপজ্জনক কর্ম পরিবেশের জন্য সতর্কতামূলক কথা বলে আসছেন।

Our Standards: The Thomson Reuters Trust Principles.

-->